চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সুপ্রাচীন। ইতিহাসের শুরু থেকে চট্টগ্রামে আরাকানী মঘীদের প্রভাব লক্ষনীয়। ফলে গ্রামীণ সংস্কৃতিতেও এর যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। চট্টগ্রামের মানুষ আতিথেয়তার জন্য বিখ্যাত।
চট্টগ্রামের বর্তমান সংস্কৃতির উন্মেষ হয় ১৭৯৩ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কর্তৃক চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত পর। ভারতীয় উপমহাদেশে সামাজিক ধানোৎপাদন ও বন্টনে পদ্ধতিগত আমূল পরিবর্তন হয়। অন্যান্য স্থানের মতো চট্টগ্রামেও একটি নতুন মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ের উদ্ভব হয়। ইংরেজরা প্রচলনা করে ইংরেজি শিক্ষা। মধ্যবিত্ত সম্প্রদায় ইংরেজি শিক্ষার মাধ্যমে পাশ্চাত্যের সঙ্গে পরিচিত হতে শুরু করে।
সিটি গেইট, চট্টগ্রাম |
চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানের ইতিহাস সমৃদ্ধ। শেফালী ঘোষ এবং শ্যাম সুন্দর বৈষ্ণবকে বলা হয় চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানের সম্রাট ও সম্রাজ্ঞি। জনপ্রিয় ব্যান্ড সোলস, এল আর বি, রেঁনেসা, নগরবাউল এর জন্ম চট্টগ্রাম থেকেই। মাইজভান্ডারী গান ও কবিয়াল গান চট্টগ্রামের অন্যতম ঐতিহ্য। কবিয়াল রমেশ শীল একজন বিখ্যাত কিংবদন্তি শিল্পী। আইয়ুব বাচ্চু, কুমার বিশ্বজিৎ, রবি চৌধুরী, নাকিব খান, পার্থ বডুয়া, সন্দিপন, নাসিম আলি খান, মিলা ইসলাম চট্টগ্রামের সন্তান। মডেল তারকা নোবেল, মৌটুসি, পূর্ণিমা,শ্রাবস্তীর চট্টগ্রামে জন্ম । সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড পরিচালিত হয় জেলা শিল্পকলা একাডেমি, মুসলিম হল, থিয়েটার ইন্সটিটিউটে।
পতেঙ্গা
পতেঙ্গা
বাংলাদেশের চট্টগ্রাম শহরের সমুদ্র সৈকত
যা কর্ণফুলী নদীর মোহনায় অবস্থিত
বন্দর নগরী চট্টগ্রাম থেকে
প্রায় ১৪ কিলোমিটার দক্ষিণে
অবস্থিত। পতেঙ্গা
চট্টগ্রাম শহরের একটি জনপ্রিয়
পর্যটন কেন্দ্র।
পতেঙ্গ সমুদ্র সৈকত, চট্টগ্রাম |
শাহ
আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং বাংলাদেশ নৌ
বাহিনীর ঘাঁটি বিএনএস ঈসা
খান পতেঙ্গার সন্নিকটে অবস্থিত। এছাড়া চট্টগ্রাম বন্দরের
অনেক জেটি এইখানে অবস্থিত।
এছাড়া জনপ্রিয় পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত ও
বাংলাদেশ নেভাল একাডেমি এইখানে
অবস্থিত ।
ফয়েজ
লেক চট্টগ্রামের
পাহাড়তলী এলাকায় অবস্থিত একটি কৃত্রিম হ্রদ। ১৯২৪
সালে আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে
কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে খনন করা হয়
এবং সেসময় পাহাড়তলী লেক
হিসেবে পরিচিত ছিল।
পরবর্তীতে ইংরেজ রেল প্রকৌশলী
ফয়-এর(Foy) নামে নামকরণ করা
হয়। লেকটি
কলোনিতে
বসবাসকারী লোকদের কাছে পানি পৌঁছানো উদ্দেশ্য তৈরি করা হয়েছিল ।
ফয়েজ লেক, চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ |
বাংলাদেশ রেলওয়ে এটির মালিকানা ।
৩৩৬
একর জমির উপর এই
লেকটি পাহাড়ের এক শীর্ষ থেকে
আরেক শীর্ষের মধ্যবর্তী একটি সংকীর্ণ উপত্যকায়
আড়াআড়ি ভাবে বাঁধ নির্মাণের
মাধ্যমে সৃষ্ট। ফয়’স
লেকের পাশেই আছে চট্টগ্রাম
শহরের সবচেয়ে উঁচু পাহাড় বাটালি
পাহাড়।
ফয়’স লেকের পাশেই
অবস্থিত চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা।বর্তমানে
এখানে বিরল প্রজাতির পাখি
এবং ডিয়ার পার্কে হরিণ
দেখার ব্যবস্থা আছে। বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ নির্মাণ প্রতিষ্ঠান কনকর্ড একটি বিনোদন
পার্ক স্থাপন করেছে যেখানে
দর্শনার্থীদের জন্য লেকে নৌকা
ভ্রমন, রেস্তোরাঁ, ট্র্যাকিং এবং কনসার্ট এর
আয়োজন করা হয়ে থাকে।
। ফয়’স লেকের
আশেপাশের মনোরম পরিবেশ এবং
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আকর্ষণে প্রতি বছর দেশি
বিদেশি বহু পর্যটক ছুটে
আসেন।
বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকো-পার্ক (Botanical Garden and Eco-park) চট্টগ্রামের
সীতাকুণ্ড উপজেলায় অবস্থিত একটি বন্য প্রাণীর
অভয়ারণ্য। ১৯৯৮
সালে এই বোটানিক্যাল গার্ডেন
ও ইকোপার্ক প্রতিষ্ঠিত হয় চন্দ্রনাথ পাহাড়ের পাদদেশে । এই
বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্যটি গঠিত ৮০৮.০০ হেক্টর জমি
নিয়ে ।
,
ইকো-পার্ক, সিতাকুণ্ড, চট্টগ্রাম। |
১,০০০ একর জায়গায়
বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ৯৯৬ একরজায়গা
জুড়ে ইকোপার্ক এলাকা। পার্কটিতে
রয়েছে বিরল প্রজাতির গাছপালা,
হাজারো রকমের নজরকাড়া ফুলের
গাছ, কৃত্রিম লেক ও নানা
প্রজাতির জীববৈচিত্র্য। রয়েছে
সুপ্তধারা ও সহস্রধারা ঝর্ণা
সহ ঝিরিপথের ছোট-বড় বেশ
কয়েকটি ঝর্ণা, পিকনিক স্পট,
বিশ্রামের ছাউনি।
বাংলাদেশ নেভাল একাডেমি (BNA) একটি প্রশিক্ষণ ও
সামরিক
শিক্ষা
প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশ নেভাল
একাডেমি হচ্ছে
বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র।
নেভাল একাডেমি, চট্টগ্রাম |
বাংলাদেশ নৌবাহিনীর মধ্যে
কর্মকর্তা হতে
প্রস্তুতদের এ
প্রতিষ্ঠানে প্রাথমিক প্রশিক্ষণ প্রদান
করা
হয়।
এটি
বন্দর
নগরী
চট্টগ্রামে অবস্থিত।
বাটারফ্লাই পার্ক বাংলাদেশের চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গা নেভাল একাডেমি রোডে অবস্থিত একটি প্রজাপতি পার্ক।
পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত, কর্ণফুলী নদী ও
বঙ্গোপসাগরের কূল ঘেঁসে চট্টগ্রামের নেভাল একাডেমির পাশেই ১৫ নম্বরে বাহারী রঙের জীবিত হরেক প্রজাতির প্রজাপতি নিয়ে গড়ে উঠেছে বাংলাদেশের সর্বপ্রথম প্রজাপতি পার্ক।
বাটারফ্লাই পার্ক, পতেঙ্গা |
প্রায় ৬০০ প্রজাতির প্রজাপতি রয়েছে প্রায় ছয় একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত এই পার্কটিতে । ধারণা করা হয় এই পার্কটিকই ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম প্রজাপতি পার্ক। প্রজাপতি সাধারণত সকাল ৯টা থেকে ১১টার মধ্যে এবং বিকেলের দিকে পার্ক জুড়ে উড়ে বেড়াতে দেয়া যায়। দর্শনার্থীদের জন্য পার্কটি প্রতিদিন সকাল নয়টা থেকে রাত এগারটা পর্যন্ত খোলা থাকে। দেশের একমাত্র এ প্রজাপতি পার্কে রয়েছে ট্রপিক্যালগার্ডেন, বাটারফ্লাই জোন, বাটারফ্লাই মিউজিয়াম, বাটারফ্লাই রিয়ারিংরুম, কৃত্রিম লেক-ঝর্ণা, ফিশফিডিং জোন ও বাটারফ্লাই ফিডিং জোন। একটি রিসোর্ট, রেস্টুরেন্ট, ওয়াটার রাইড, কৃত্রিম ঝরনা, বর্ণিল ফুলের বাগান আর সেই বাগানে প্রজাপতির মেলা সব মিলিয়ে বিনোদন উপভোগের অপূর্ব সমন্বয় আছে পার্কটিতে। নানা রঙের প্রজাপতির দেখা মেলে এ পার্কে।
Fantastic
ReplyDelete